বেলা শেষের ডাক।
রকিবুল ইসলাম।
০৫.০৫.২৫।
বেলা শেষের ডাক আমার কানে বাজে।
এখনো এলোনা সে,খুঁজে-ফিরেছি যারে সকাল-সাঁঝে।
বেলা শেষের ডাক আমার কানে বাজে।
প্রতীক্ষা করেছিনু যার তরে সারা জীবন ভরে,
অবজ্ঞা আর অবহেলায় পড়ে রইল সে,এখনো এলোনা ফিরে।
বেলা শেষের ডাক আমার কানে বাজে।
এখনো পেলাম না তবু চির আরাধ্য সেই তাকে
আমাতে আপন করে।
পারব কি করে!ভাবেনি কখনো সে আমাকে তার নিজের মত করে।
বেলা শেষের ডাক আমার কানে বাজে।
সুখ খুঁজতে গিয়ে তবু দুঃখকে নিয়েছি আপন করে,
সয়েছি যাতনা যত দিয়েছে সে যা অতীব যতন করে।
বেলা শেষের ডাক আমার কানে বাজে।
আসল কি নকল,খাঁটি কি মেকি করিনি যাচাই,
রয়েছি পড়ে তার মোহের আবেশে।
বেলা শেষের ডাক আমার কানে বাজে।
তার চলার পথ মসৃণ করতে গিয়ে
প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি,আশা-নিরাশার দোলাচালে
লাভ-ক্ষতির হিসাব করতে বেমালুম গিয়েছি ভুলে।
ভাঙলো ঘুম আমার অবশেষে বেলা শেষের ডাকে।
বেলা শেষের ডাক আমার কানে বাজে
অ’সুখের ইতি!
রকিবুল ইসলাম।
০৪.০৫.২৫।
স্রোত যখন ছুটে চলে নিরবধি,
ভাটায় বদলে যায় জীবনের রীতি।
নিয়ে যায় মায়া,মমতা,পিরিতি।
পূর্ণ করে অপূর্ণতায়!বাজিয়ে বাঁশি।
জরা ভুলে যবে হাসেন রবি,
গগনে উঠে নীলাভ আলোর শশী।
কলুষতা হতে আত্মা পেলে মুক্তি,
সুখের অথৈ সরোবরে ভাসে মহী।
আমি শুধু পেলাম না পলি,
উর্বরতায় ধরা যখন উঠে ভরি।
শঙ্খচিল শালিক আসে ঘরে ফিরি,
এই বুঝি অ’সুখের ঘটল ইতি।
তোমায় ঢুকিতে মানা।
রকিবুল ইসলাম।
তারিখঃ০৩.০৫.২৫।
গিয়াছিলাম সেদিন হাঁটিতে হাঁটিতে
তোমার হৃদয় বাড়ির উঠানে।
উঠানের দুই পার্শ্বে দুইটি ঘর,
একটি ঘর দক্ষিণ পার্শ্বে,
সতত আলো বাতাস
যেথা করিতেছে খেলা।
অন্য ঘরটি উত্তর প্বার্শে,
আঁধারে বেষ্টিত যাহা,
হিম-শৈল বরফে ঢাকা সদা।
উত্তর মেরুর গৃহদ্বারে রহিয়াছে লেখা,
“এসো হে সখা”-স্বাগত তোমায় হেথা।
দক্ষিণ গোলার্ধের কক্ষের কপাটে লেখা,
আসিও না হেথা তুমি সখা,
আস যদি কভু,ব্যথায় পুড়িবে সদা।
তবুও,আশায় বাঁধিয়া বুক গিয়াছিলাম তথা,
হইলাম ভগ্ন-মনোরথ, দর্শিয়া নোটিশ একখানা-
-“তোমায় ঢুকিতে মানা!”
এই ঘুম যেন না ভাঙে!
রকিবুল ইসলাম।
তারিখ:০২.০৫.২৫।
আমিতো সখি সদা শিষ দিয়ে যাই,
গেয়ে যাই গান তোমার কর্ণমূলে!
তবে কেন কর তব এত মিনতি?
কাছে ডাকো মোরে আকুতি ভরা কন্ঠে,
শুধাও বারবার!
শুনতে চাও পাখির কলরব।
অবজ্ঞায় করেছ হেলা এতদিন যারে,
এক্ষণে যে স্মর তারে!
শুনতে চাও সংগীত তার দরাজ কন্ঠে।
তবে কি কেঁটেছে মোহ ভায়োলিন আর পিয়ানোর?
শেক্সপিয়ার আর জনসনের লেখা কবিতা ফেলে শুনতে চাও আবৃত্তি নজরুল আর রবি ঠাকুরের।
শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কামরা ফেলে ভাল লাগে এখন তোমার বাতায়ন খোলা রেখে
দক্ষিণা সমিরনে গা ভাসাতে,অঙ্গ ভেজাতে।
বেলা কি তোমার তবে ফুরিয়ে এলো?
নাহ্! এ কি ভাবছি আমি!
বেঁচে থাকো তুমি সহস্র বছর ধরে এই ধরণী তলে একান্তই আমার হয়ে।
নিশ্চিন্ত,নির্বিঘ্ন নিশি যাপনে সঙ্গী হয়ে থাকব তোমার সাথে।
ঘুম যদি আসে তখন গভীর আবেগে জড়াব তোমায়,
লুকাব মস্তক মম তব বক্ষ মাঝে।
তুমি তখন তোমার মেহেদী রাঙা হাত
বুলিয়ে দিবে আমার মস্তকে।
অপার শান্তির এক স্বর্গীয় ঘুমে নিমগ্ন হব আমি।
এই ঘুম যেন না ভাঙে,,,,,,,,!
মে দিবস!
রকিবুল ইসলাম।
০১.০৫.২৫।
মে দিবসে ছুটির দিনে
নিস্তার নাই কোন মতে।।
আজও ভাই ছুটতে হবে,
রুটি রুজির সন্ধান পেতে।
নাইরে ভাই,নাইরে ভাই!
গরীবের কোন ছুটি নাই।
কর্ম যজ্ঞে মাতলে তবে
অভুক্ত সবে আহার পাবে।
আট ঘন্টা কাজের দাবিকে,
মহাজনে আজ থোড়াই করে।
প্রাণ ঝরল যে দাবিতে,
শুধুই তা কাগজে-কলমে।
একমুঠো সুখ!
রকিবুল ইসলাম।
৩০.০৪.২৫।
সেদিন নিশুতি ক্ষণে,
হৃদয় দুয়ার খুলে
বসেছিনু একা উদাস মনে,
চেয়েছিনু শুধু “একমুঠো সুখ!”
পাওনি তবু শুনতে,
নিশি জাগা ভোরে
ডেকেছি কত আবেগ আহ্লাদে,
চেয়েছিনু শুধু “একমুঠো সুখ!”
উপহাস, অবহেলা ভুলে,
আশায় বুক বেঁধে
বাঁচতে ভূমে নতুন করে,
চেয়েছিনু শুধু “একমুঠো সুখ!”
হেসেছিনু যত ভবে,
কেঁদেছিনু ঢের তবে
সেটা মোর নিয়তির খেয়ালে,
চেয়েছিনু শুধু “একমুঠো সুখ!”
সুখ সুখ করে,
গেলাম শুধু বিলাপ করে
আসেনি সে আপনার হয়ে,
চেয়েছিনু শুধু “একমুঠো সুখ!”
তোমায় অনেক ভালবাসি।
রকিবুল ইসলাম।
তারিখঃ২৯.০৪.২৫।
তুমি না হয় নিঃসীম আঁধারের মাঝে আলোর দিশারী হয়ে আমার স্বপ্নেই বেঁচে থেকো।
তুমি না হয় আবার নতুন করে একান্তই
আমার হয়ে এসো।
তুমি না হয় শুধু আমার জন্য তোমার জীবনের কিছুটা আশা যতন করে রেখো।
তুমি না হয় আবার কিছুটা স্বপন আমার জন্য মুঠো ভরে রেখো।
কান্না না হয় কিছু লুকিয়ে রেখো অতীব যতনে আমার লাগি।
মুছে দিব তা সযতনে আমার নঁকশি আঁকা রুমাল দিয়ে।
শেষ জীবনে সহায়হীন তুমি খুঁজবে সহায় যখন পাগলপ্রায় হয়ে।
হাঁতড়ে বেড়াবে অতীত স্মৃতি সুখের কিছু ছোঁয়া পেতে।
তোমার আকাশের মেঘমালা সরিয়ে আসব নিয়ে তখন স্নিগ্ধ রোদ্দুর,ঝলমলে আলো
তোমার বসুন্ধরা আলোকিত করতে।
তুমি না হয় তোমার চোখের কোণে জমিয়ে রেখো কিছু অশ্রু,
বিসর্জিত হবে যা আমার মরণকালে,
পড়বে তোমার কপল বেয়ে।
জুড়াব মোর তপ্ত দেহ,অতৃপ্ত আত্মা সেই অশ্রুজল গায়ে মেখে।
এখন আমার যৌবন,তোমারও তা।
ছুটছ তুমি ভবিষ্যৎ আলোর লোভে ভয়-ডরহীন দিক্বিদিক,নেই কোন পিছুটান।
আমিও সাধিনি বাঁধ তোমার অদম্য যাত্রাতে।
পড়ন্ত বিকেলের শাখাহীন বৃক্ষের ন্যায়,
ঠাঁই দাড়িয়ে রব নাঙ্গা সর্ব গায়।
তুমি না হয় সেই গাছের গোড়ায় পানি ঢেলে
আমায় একটু সতেজ করো।
তুমি না হয় আমার অন্তিম লগনেই ভালবেসো।
আমার মুখে হাসি ফোঁটানোর জন্য না হয়
একটু কলা করো।
শেষ বয়সে,বয়সের ভারে ন্যুজ হয়ে পড়া আমি যখন পাব না ঠাঁই আর কোথাও,
তুমি না হয় তখন আমার আশ্রয় হয়ে এসো,
তখন না হয় সব অহং ভূলে একটু ভালবেসো।
ভূলে যেতে বসা হাসিটাকে না হয় তুমিই আবার শিখিয়ে দিয়ে আমার ঠোঁটে লেপ্টে দিও।
সেই হাসির রাঙা রঙে তোমার ঠোঁট রাঙিয়ে নিও।
তুমিও যখন বৃদ্ধা হবে, অচল তোমার
শয়নের বিছানাটাও না হয় আমিই বিছিয়ে দেব।
বেলা শেষের ডাকে যখন তুমি
কাউকে পাবে না পাশে,
বলব আমি,ভয়গো কিসের?
আছি হয়ে সাথী সতত তোমার সাথে।
অবহেলার চাদরে মুড়িয়ে এতদিন যার ভালবাসাকে করেছ তাচ্ছিল্য অবজ্ঞাভরে,
আমি না হয় এখন এই বয়সে গলা ফাঁটিয়ে বলব (সেই আমি)-
“তোমায় অনেক ভালবাসি।”