1. info@dainiknetrojolsahitthomagazine.com : দৈনিক নেত্রজল সাহিত্য ম্যাগাজিন : দৈনিক নেত্রজল সাহিত্য ম্যাগাজিন
  2. info@www.dainiknetrojolsahitthomagazine.com : দৈনিক নেত্রজল সাহিত্য ম্যাগাজিন :
শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ১০:৩৭ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম_ক্যানভাস কবি_মহুয়া_মিত্র

  • প্রকাশিত: শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ৬৯ বার পড়া হয়েছে

শিরোনাম_ক্যানভাস
কবি_মহুয়া_মিত্র

এবার সোমক ও বিতস্তার বিয়ের পর প্রথম ভ্যালেন্টাইন্স ডে। যদিও এই সব ব্যাপার নিয়ে বিতস্তার কোনো কালেই কোনোও মাথা ব্যথা নেই। বিয়ের আগে দু-একটা ক্রাশ থাকলেও এই বিশেষ দিনে ও বলতে গেলে আর পাঁচটা দিনের মতোই থেকেছে। অবশ্য সোমকের ব্যাপারটা ও ঠিক জানে না। এমনিতে ওদের অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ তায় সোমক যথেষ্ট গুরুগম্ভীর মানুষ। তাই এই বিষয়ে ওদের কোনো কথা হয় নি। যদিও মাস তিনেকের বিবাহিত জীবনের সব দিনই ভ্যালেন্টাইন্স ডে কিন্তু ঐ যে, সোমকের গাম্ভীর্য! ভালোবাসা, রোমান্টিকতা, নবদম্পতির খুনসুটি, দায় দায়িত্ব সবেতেই ঐ এক গাম্ভীর্যের মোড়ক এখনও ঠিক করে বিতস্তাকে সোমকের কাছাকাছি আসতে দেয় নি। তবে সব হিসেব গোলমাল করে দিল সেদিন পর্ণার ফোন।
পর্ণা একদিকে সোমকের মাসতুতো বোন আর অন্যদিকে সোমকের বেস্টফ্রেন্ড গৌরবের স্ত্রী। তাই পর্ণা যখন ফোন করে ভ্যালেন্টাইন্স ডে’র প্ল্যান জানতে চাইল তখন সেভাবে কিছু বলতে পারে না বিতস্তা।
পর্ণা বলে ওঠে, –” কি তখন থেকে এ্যাঁ উঁ করে যাচ্ছো বৌদি। বুঝেছি, কিছুই ঠিক করে ওঠো নি।”
–” না মানে ও তো একটু গম্ভীর …”
কথা শেষ করতে পারে না বিতস্তা, হৈহৈ করে ওঠে পর্ণা, –” আরে বাবা, এমন কিছু করো যেটা দাদার সঙ্গে ম্যাচ করে আবার তোমারও ভালো লাগে। শোনো, তুমি বরং ঘরেই একটা রোমান্টিক ডিনার অ্যারেঞ্জ করো। দাদার পছন্দের খাবার বানাও বা আনাও। দারুণ ক্রকারি সেট দিয়ে টেবিল সাজাও। চাইলে সুগন্ধি মোমবাতি জ্বালাও। ঘরে অনেক অনেক গোলাপ মাস্ট। চারিদিকে লাল রঙে ঢেকে দাও। তুমিও লাল রঙে সাজো। আর ব্যাকগ্রাউন্ডে অতি অবশ্যই প্রেমের কবিতা চালাও। পারলে তুমিও দাদাকে প্রেমের কবিতা আবৃত্তি করে শোনাও। ও কবিতা শুনতে পছন্দ করে। ব্যস, ভ্যালেন্টাইন্স ডে জমে উঠবে।”
মন্দ নয় সবটা। বিতস্তা ঠিক করল তবে তাই হোক।
সারা দিন ধরে নিজের হাতে সব গুছিয়েছিল। তবে সবেতে জল ঢালতে এক সেকেন্ডও লাগে নি সোমকের। অফিস ফেরত ঘরে ঢুকে সোচ্চারে বলেছিলো, –” সবটাই বড্ড মেকি বিতস্তা, কৃত্রিম।”
শহরতলীতে আজ বসন্ত এসেছে। এই মাঝরাতে উথাল পাথাল দখিনা বাতাসে ভালোবাসার গন্ধ। বিতস্তাদের ফ্ল্যাটের ব্যালকনি সংলগ্ন পলাশ গাছে দু-তিনটে লালচে আভার উঁকিঝুঁকি। সোমক অঘোরে ঘুমাচ্ছে। পাশের ঘরে বিতস্তার রাতজাগা চোখে জল নেই। একটু আগে ছিল, এখন নেই। আর থাকবেই বা কেন? ও তো বিরাট কোন উপহার বা বিশাল কোনো কিছু দাবি করে নি। শুধু চেয়েছিল ভালোবাসার আবহে, ভালোবাসার সন্ধ্যায় ভালোবাসার মানুষের সান্নিধ্য। তার বদলে এই প্রাপ্তি?
বিতস্তার দুই চোখে এখন রঙের খেলা। বিয়ে হওয়া ইস্তক সময় দিতে পারে নি সাধের রঙ তুলিগুলোকে। সোমকের মায়ায় জড়াতে গিয়ে হারিয়ে ফেলেছিল নিজেকে। ভুলে গেছিল নিজেকেও ভালোবাসা দরকার। তাই এই রাতের অন্ধকারে ওর ক্যানভাসে ফুটে উঠেছে এক স্বপ্নের ভোরের ছবি। কি অদ্ভুত রঙের মেলা পুরো আকাশ জুড়ে আর দূরে একটা কৃষ্ণচূড়া গাছ। পুরো ক্যানভাসে আর কিছু নেই অথচ বসন্ত তার রঙের ডালি উজার করে দিয়েছে ওর চিত্রপটে। বসন্ত কি শুধু ভালোবাসার মাস? বসন্ত নতুন পাতার মাস। শূন্যস্থান পূর্ণ করে নিজেকে মেলে ধরার মাস। তাই তো বিতস্তা বসন্তের প্রথম রাতে নিজেকে নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত। চিরচেনা কোকিল ডাকা বসন্ত আজ অচেনা হয়ে দেখা দিয়েছে বিতস্তার মনে যাতে সে এক নতুন বসন্তের জন্ম দিতে পারে তার ভালোবাসার ক্যানভাসে।

শেয়ার করুন

আরো পড়ুন
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট