মধু মাস
কবি ইমরুল কায়েস লালটু
আম, জাম, কাঁঠাল, জামরুল
পাড়ার ধুম পড়েছে,
লিচু আর আশফল দিয়ে
কচিকাঁচার আসর জমেছে।
পেয়ারা আর সবেদার সাদে
মন ভরেছে, রসেতে গাল ভরেছে।
নবান্নুর ধান কাটার আসর জমেছে,
ঈশান কোণে মেঘ জমেছে,
কাচারির সামনে ধান মাড়াই চলছে
মেঘ দেখে তাই ধান গুলায় উঠছে।
ভাপা-কুলির গন্ধ ছড়াচ্ছে,
গরমেতে বটতলাতে ঠাই নিয়েছে,
সাথে এক কাঁথি তাল নিয়েছে।
কাঁচা আমেতে গরম কাটছে,
শরীরের গরম কাটাতে
লেবুর রসের শরবত বিলাচ্ছে।
সৃষ্টিকর্তার অশেষ মহিমা বুঝাচ্ছে,
শরীরের ভেতরটাকে ঠান্ডা করছে।
তেতুলের সাথে লবণার আর ঝাল
ললনার হাতে শোভা পাচ্ছে,
কোনটা ফেলে কোনটা খাবে
বৈশাখ-যষ্টির আগমন ঘটছে,
মধুমাস এসেছে।
ঘেরের পানি শুকিয়ে যাচ্ছে,
তার চাতালে নাঙ্গল চলছে
নব উদ্যমে কাজ চলছে,
মাছ গুলাকে স্বস্তি দিচ্ছে,
শ্যাওলা গাছেও ফুল ফুটেছে।
ঝিঙ্গে-কুমড়া মাচায় ঝুলছে,
বাঙ্গি-তরমুজের মেলা বসেছে,
পাক পাকালী ডালে ডালে ঘুরছে
কাঠবেড়ালিটা দিশেহারা ছুটছে,
হঠাৎ করে বাতাস বইছে
আমতলা তে সবাই জুটেছে
দাদী মৌ ফোকলা হাঁসছে,
মধু মাস এসেছে মধুমাস।
জামাই ষষ্ঠী চলে এসেছে,
বউটা তাই মেহেদি মাখছে,
আচার গুলা রোদ পোয়াচ্ছে,
হালখাতার খাতা রেডি হচ্ছে,
মহাজনরা হিসাব করছে,
ফারাক্কা বাঁধে পদ্মা শুকাচ্ছে,
জেমসের হাতে গিটার উঠেছে
পুরনো রুমাল বাতাসে উড়ছে,
মোবাইলের কল্যানে জোড়া বদলাচ্ছে, একে ছেড়ে ওকে ধরছে,
শেষ জামানার নমুনা বুঝাচ্ছে।
কপোত কপোতী পেঁপে খাচ্ছে
মধুমাস এসেছে, মধু মাস।
গরম আর না সইছে,
সারা গায়ে আউলা ঝাউলা চুলকাচ্ছে,
গায়ের জামা কাদের ঝুলছে,
পানির আরেক নাম জীবন
সৃষ্টিকর্তা এখানে বুঝিয়েছে।
আম কাঁঠাল গাল ভরছে
তা রসেতে মারসি জুটেছে,
মৌমাছিরার গুঞ্জন করছে
মধুমাস এসেছে, মধু মাস।