ভারতীয় কবি মহামায়া রুদ্রর অণুগল্প ।
“”ভয়””। তারিখ:-১৬-০৫-২০২৫
গল্পের নাম ভয়”
সত্য ঘটনা অবলম্বনে গল্পটি লেখা ,,উত্তর 24 পরগনা! জেলার অন্তগত ঝাউডাঙ্গা, গ্রামের ছেলে রামকৃষ্ণ।
উনি আমার দাদা””
ডুমোর শ্মশানে আজ সকালে জ্যাঠাই মাকে দাহ করে ফিরেছেন আমার জেঠু। আমার এখন পরীক্ষা চলছে , আমার খাতাটা বান্ধবীর কাছে রয়ে গেছিল। আমি দুপুরে বান্ধবীর বাড়ির দিকে রওনা দিলাম খাতা আনার উদ্দেশ্যে । বান্ধবীর বাড়িতে বসে পড়াগুলো ঝালাই করে নিতে নিতে প্রায় সন্ধ্যা নেমে আসলো। সে সময় আমি বাড়ির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লাম। হটাৎ যা চোখে পড়ল সেটা দেখে আমি একপ্রকার চমকে উঠলাম। আমার সারা শরীর কাঁপতে থাকলো।নিশ্বাসের গতি বেড়ে গেল। আমি সেই ডুমোর শ্মশানের ধারের রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম। যেখানে আজই জেঠাইমা কে দাহ করে হয়েছে। বেরোনোর সময় এতটা খেয়াল করিনি। তাছাড়া অন্য রাস্তায় গেলে অনেক ঘুরতে হবে। সন্ধ্যা নেমে এসেছে । মেঘের গর্জনের সঙ্গে ঝড়ো হওয়া ও চলছিল।
মাঝে মাঝে বাঁশ বাগানের
কড়াৎ কড়াৎ আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। পরিবেশ টাও কেমন ছমছমে বিরক্তি কর আর ঘন অন্ধকার।
ঝড়ের দাপটে চোখ মেলতে পারছি না , পথের ধুলো সবই যেন চোখের মধ্যে।
হঠাৎ করে চোখ পড়ল শ্মশানের পাশে বাঁশ বাগানের দিকে। মনে হলো কেউ একজন বাঁশ বাগানের মাথার থেকে মাটির একটু উপর পর্যন্ত পা নামিয়ে বসে দোল খাচ্ছে।আমি ভয়ে থরথর করে কাঁপছি। সামনে বাকি আছে আর অল্প একটু রাস্তা। তারপর পেছনে অনেকটা।
তারই মধ্যে বৃষ্টি চলতেই থাকছে। কিছুই যেন ভাবতে পারছি না।
মনে সাহস নিয়ে এক দৌড়ে সামনের দিকে এগিয়ে গেলাম।
তারপর ওখানেই জ্ঞান হারালাম ।চায়ের দোকানে বসা কয়েকজন আমাকে তুলে জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করল।
জ্ঞান ফেরার পর আমাকে জিজ্ঞাসা করলো কি হয়েছিল ? আমি ধীরে ধীরে সব কথা খুলে বললাম।
এবার চারিদিক থেকে একের পর এক ভৌতিক ও ভয়ের কাহিনী সবাই বলতে শুরু করল।
তারই মধ্যে কিছু মানুষ আমাকে নিয়ে এগিয়ে চলল ভূতের সন্ধানে। সেখানে সবাই প্রায় ভয় পেল । কারণ একটা সাদা কাপড় পড়ে আছে বাঁশের মাথা থেকে দশ হাত নিচে অব্দি । মনে হচ্ছে ঠিক যেন লম্বা কেউ একজন দোল খাচ্ছে। আর মাঝে মাঝে বাঁশবাগান থেকে নানা ধরনের আওয়াজ ভেসে আসছে।
সকলে একজোট হয়ে ধীরে ধীরে ভূতের কাছে এগিয়ে গেলাম ।আমার বরাবরি সাহসটা একটু বেশিই ছিল।
তবুও রামরাম করতে করতে ভূত টাকে ধরলাম জাপটে। শেষমেষ দেখা গেল মড়ার কাপড় । কেউ ছুঁড়ে ফেলেছে, ওটা গিয়ে বাঁশের মাথায় আটকে পড়ে লম্বা হয়ে ঝুলছে আর বাতাসে দুলছে।
সবাই তখন সেই অন্ধকার বৃষ্টি ভেজা রাতে একটা ভয় মিশ্রিত হাসিতে যে যার দিকে বিস্ময়ে তাকিয়ে কিছুক্ষণ আগের সেই অদ্ভুত পরিস্থিতির কথা ভাবতে ভাবতে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম।