ব্যর্থতা: সাফল্যের প্রথম সিঁড়ি
কবি -টি আর রাব্বানী
মানুষ ব্যর্থতাকে অপছন্দ করে, অথচ সাফল্যের প্রকৃত শিক্ষক এই ব্যর্থতাই। আমরা চাই, এক ধাপে সফল হতে, কিন্তু তেমনটি হলে জীবনের অনেক অজানা শিক্ষা আমাদের কাছে অধরাই থেকে যায়। প্রকৃতপক্ষে, ব্যর্থতা হলো সেই আয়না, যেখানে আমরা নিজেদের ভুল-ত্রুটি স্পষ্টভাবে দেখতে পাই এবং সেগুলো সংশোধন করার সুযোগ পাই।
ব্যর্থতার প্রকৃতি বড়ই অদ্ভুত। এটি কখনো আমাদের ভেঙে ফেলে, আবার কখনো আমাদের ভেতরের শক্তিকে জাগিয়ে তোলে। যারা ব্যর্থতার ভয়ে থেমে যায়, তারা আসলে জীবন থেকে অনেক কিছু শিখতে পারে না। অথচ ব্যর্থতার আসল কাজ হলো—মানুষকে গড়ে তোলা, নতুনভাবে চিন্তা করার শক্তি দেওয়া এবং আরও পরিপক্ব করা।
আমরা যদি ইতিহাসের দিকে তাকাই, তাহলে দেখবো—বিশ্বের সবচেয়ে সফল ব্যক্তিরা একাধিকবার ব্যর্থ হয়েছেন। আলবার্ট আইনস্টাইন, থমাস এডিসন, স্টিভ জবস, জে. কে. রাউলিং—এরা প্রত্যেকেই জীবনের কোনো না কোনো পর্যায়ে ভয়াবহ ব্যর্থতার মুখোমুখি হয়েছেন। কিন্তু তারা হাল ছাড়েননি, বরং ব্যর্থতাকে ব্যবহার করেছেন তাদের সাফল্যের পাথেয় হিসেবে।
আমাদের সমাজে ব্যর্থতাকে নেতিবাচক চোখে দেখা হয়। কেউ একটি কাজে ব্যর্থ হলে তাকে নিরুৎসাহিত করা হয়, তার সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। অথচ ব্যর্থতা কোনো অপমানের বিষয় নয়, এটি একটি শেখার সুযোগ। যারা একবার ব্যর্থ হয়ে চেষ্টা করা বন্ধ করে দেয়, তারাই প্রকৃত ব্যর্থ। সফলতার জন্য সবচেয়ে জরুরি জিনিস হলো—অধ্যবসায়।
আমাদের মনে রাখতে হবে, ব্যর্থতা মানেই হেরে যাওয়া নয়। বরং এটি একটি নতুন সুযোগ, নতুন করে শেখার, নিজেকে সংশোধন করার এবং আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসার।
তাই, যদি কোনো কাজে ব্যর্থ হও, হতাশ হবার কিছু নেই। বরং নিজেকে প্রশ্ন করো—
“আমি কোথায় ভুল করেছি? কীভাবে আরও ভালো করতে পারি?”
যতদিন চেষ্টা থাকবে, ততদিন হার নেই।
"ব্যর্থতা আসবে, কিন্তু তা যেন আমাদের থামিয়ে না দেয়।
বরং ব্যর্থতাই হোক নতুন শুরু করার প্রেরণা।"
—টি আর রাব্বানী