ধারাবাহিক গল্প।খেঁকশিয়াল ও রাজা মাশাই (গল্প -১)
কবি :রনী খাতুন
১৩/০৫/২০২৫
খেঁকশিয়াল খুব চালাক প্রাণী তা সবাই জানে। সে কিন্তু খুব ভীরুও বটে। মানুষসহ অন্যান্য সাহসী প্রাণীদের ভয়ে সে সবসময় লুকিয়ে থাকে। অথচ চুরি করে অন্যের ক্ষতি করাই তার একমাত্র ধর্মকর্ম। এ ঘরের ছানাপোনা, ও ঘরের সহজ সরল গবাদি পশু ইত্যাদি যেন কখনোই তার নজর এড়ায় না।
এছাড়া গর্দভ প্রাণীদের নিয়ে দল পাকানোটা তার আরও একটা জঘন্যতম অভ্যাস। যখনই কোনো নতুন গর্দভ প্রাণী ঐ জঙ্গলের সদস্য হয়ে আসে, তখনই ঐ খেঁকশিয়ালের দল মিথ্যা গল্প বাণে ভাসিয়ে তাকে নিজেদের দলে টেনে নেয়।আর এতে গর্দভ প্রাণীরা ভাবে এরা খুব ভালো।কী সুন্দর করে আমাকে ভালোবেসে আপন করে নিয়েছে। কতো রঙ্গ রসে অন্যের অগোচরে হাসি-ঠাট্টার কথা বলে। তাছাড়া সবাই মিলে কত্তো আদর করে আমাকে ওদের দলে টেনে নিয়েছে। এরা সত্যিই খুব ভালো।
একদিন বনের রাজা তাদের কৃত্যকাজে অসন্তুষ্ট হয়ে সভা ডাকলেন। তাদের এহেন ঘৃণ্য কর্মের ইঙ্গিত করে সাবধান হতে বললেন। কিন্তু একদিন তাদের মায়া হাসির খপ্পরে পড়ে গেলেন রাজা মাশাই নিজেও।জঙ্গলটা তখন হাসি তামাশায় পরিপূর্ণ হয়েওঠে। তবে মজার বিষয় হলো, ঐ জঙ্গলে শুধুমাত্র ঐ বাহিনীর সদস্যদের নিয়েই হাসিঠাট্টার আসর বসে।যখনই স্পষ্টভাষী সাহসী কোনো প্রাণীর আবির্ভাব সেখানে ঘটে তৎক্ষনাৎ সেখানে নিস্তব্ধ হাওয়া বইতে থাকে ।কেবলমাত্র চোখ আর ঠোঁটের ইশারায় কিঞ্চিৎ কথোপকথন চলে। রাজা মশাই ভাবলেন আমার অনুপস্থিতিতে এই বাহিনীর কজনই আসলে আমার জঙ্গলের সকল দায়িত্ব দারুণভাবে পালন করে।
কিন্তু চতুর খেঁকশিয়ালের দল একদিন রাজার কাছে হাতেনাতে ধরা পড়লো।রাজা বুঝতে পারলেন এরা তো কাজের কাজ কিছুই করে না।কেবল সৎ,কর্মঠ এবং সত্যবাদী প্রাণীদের পিছনে লেগে থাকে আর অহেতুক বদনাম করে। তিনি মনে মনে লজ্জিত হলেন এবং তাদেরকে ঘৃণা করতে লাগলেন।এছাড়াও কিছু কিছু কথা মুখ ফসকে বলতেও শুরু করলেন। তবুও খেঁকশিয়ালদের লজ্জা হয় না।আড়ালে বসে রাজা মশাই আর তার সভ্য সহকর্নীদের নামে সারাক্ষণ বদনাম করেই চলে আর গর্দভ প্রাণীদের নিজেদের দলে ডেকে এনে দল ভারী করে। (চলবে)