দুটি ভৌতিক অণুগল্প
কলমে মহুয়া মিত্র
কলকাতা
১/ শিরোনাম - ট্রেন
ট্রেনের দুলুনিতে কখন চোখ বুজে এসেছে খেয়াল নেই নিখিলের।ট্রেনটা আচমকা ঝাঁকুনি দিয়ে থেমে যেতেই ওর ঘুম ভাঙলো। অচেনা জায়গা।জানলা দিয়ে দেখলো পাহাড় জঙ্গল ঘেরা পরিবেশ, আকাশে ঘন কালো মেঘ।এই পথে নতুন ও, চাকরিতে জয়েন করতে চলেছে।কিছু মানুষ ইতিমধ্যে ট্রেন থেকে নেমেছে দেখে নিখিলও নামল।ঠান্ডা হাওয়া শরীর জুড়িয়ে দিল।হঠাৎ কোথা থেকে একজন ঝটাঝুটোধারী সাধু এসে ওর হাত ধরে বলল,--"এ ভালো জায়গা না,ট্রেনে চড়ে বোস।"বলেই যেন বাতাসে মিলিয়ে গেল।হতভম্ব নিখিল কোনমতে ট্রেনে উঠতেই একটা বীভৎস বাজ পড়ল ঠিক সেই বড়ো গাছটায় যার তলায় নিখিল ঐ সাধুর দেখা পেয়েছে।তখনই ট্রেনটা চলতে শুরু করল।জানলা দিয়ে নিখিল দেখলো গাছটায় আগুন ধরে গেছে।
২/ শিরোনাম - কে
জন্ম ইস্তক বাবার চাকরির সুবাদে দেশের বিভিন্ন স্থানে থেকেছে বাবলু। অবশেষে যখন ওরা জীবনপুরে এলো, তখনই ওর বাবা অবসর নিলেন।কিন্তু নদী-পাহাড় ঘেরা এই জীবনপুর ওদের এত ভালো লাগলো যে ওরা ওখানেই জমি কিনে বাড়ি করল। জলের দরে জমি পেল কারণ ঐ রেলপুল লাগোয়া জায়গার নাকি বদনাম আছে। অনেকে বারণও করল কিন্তু বাবলুরা কোনো কথা না শুনে ঐ ফাঁকা জায়গায় খুব সুন্দর বাড়ি তৈরি করে গৃহপ্রবেশের পূজোও করল। আশেপাশে পুরো নির্জন। বাবলুদের বাড়িতে এখনও অবশ্য ইলেকট্রিক আসে নি। সেদিন ঘন বর্ষার রাত। সবাই হ্যারিকেন জ্বালিয়ে খেতে বসেছে।হঠাৎ কলিংবেল বাজল। বাবা বললেন,--''দেখ তো বাবলু, কে এলো?" বাবলু ছুটল দরজা খুলতে। কিন্তু দরজায় হাত দিয়েই আচমকা বাবলুর মনে হলো বাড়িতে কলিংবেল তো দূরের কথা,ইলেকট্রিক অবধি নেই।তাহলে বন্ধ দরজার ওপাশে কে?