1. info@dainiknetrojolsahitthomagazine.com : দৈনিক নেত্রজল সাহিত্য ম্যাগাজিন : দৈনিক নেত্রজল সাহিত্য ম্যাগাজিন
  2. info@www.dainiknetrojolsahitthomagazine.com : দৈনিক নেত্রজল সাহিত্য ম্যাগাজিন :
শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ০২:১৩ পূর্বাহ্ন

ছোট গল্প”তোমাকে পাওয়ার জন্য” লেখক:শাহিন আলম

  • প্রকাশিত: রবিবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২৪
  • ১২৬ বার পড়া হয়েছে

ছোট গল্প”তোমাকে পাওয়ার জন্য”
লেখক:শাহিন আলম

আমি রাহাত,পেশায় একজন ডাক্তার। মর্গের লাশ পোস্ট ম্যাডাম করা আমার দায়িত্ব।মা-বাবা আর আদরের ছোট বোনকে সাথে নিয়ে একটা ছোট বাংলোতে থাকি।লাশ পোস্ট ম্যাডাম করে আমাকে প্রায় গভীর রাতে বাসা ফিরতে হয়।সেদিন ছিল অমাবস্যার রাত।আমার যা দায়িত্ব সেই দিনও ঠিক তাই করতেছিলাম একটা অজ্ঞাত মেয়ে বয়স ঠিক বুঝতে পারছিনা।আমি আর আমার এসিস্ট্যান্ট আমাদের দায়িত্ব পালন করতে ছিলাম। এর মাঝে হঠাৎ আমার চোখ পড়ল মেয়েটির মুখের উপর,সেই চিরো চেনা মায়াবি মুখ টানা টানা চোখ দেখে যেন নিমিষেই আমার দেহ থেকে প্রাণটা চলে যায় যায় অবস্থা।চারিদিকের সব কিছু ঘোলা হয়ে আসছে আমার চোখের সামনে।
(পূর্বের ঘটনা)- আমি চাকরির সুবাদে বিভিন্ন যায়গায় যেতাম বদলি জনিত কারনে।সাথে আমার পরিবারের সকলেই থাকত।আমি তখন সেগুনবাগিচায় একটা হাসপাতালে চাকরি করি।সেখানে নিয়মিত পোস্ট ম্যাডাম করতাম আর আমার এসিস্ট্যান্ট ছিলো একটা মেয়ে, তার নাম ছিল অবন্তী।তার নামটা যত সুন্দর সে দেখতেও তার থেকেও বেশি সুন্দরী।পাশাপাশি চলাফেরার জন্য আমাদের মাঝে ভালো লাগার সৃষ্টি হয়।গড়ে ওঠে বন্ধুত্বের সম্পর্ক।আস্তে আস্তে বন্ধুত্ব থেকে ভালোবাসা তৈরি হয় আমাদের দু’জনের।প্রায় সময় আমরা দুজন ঘুরতে যেতাম দুচোখ যে দিকে যায়।এভাবে দিনের পর দিন আমাদের ভালোবাসা বাড়তে থাকে। হাসপাতালে আমাদের চোখে চোখেও কথা হতো লোকজনের সামনে।যেহেতু দুজনে বিয়ের উপযুক্ত ছিলাম তাই আমরা পারিবারিক ভাবে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিলাম। আমার বাবা-মা ওর বাসায় বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে গেলো। সব কিছু ঠিক ছিল ওর বাবা-মা ও রাজি ছিল এই বিয়েতে। আমার বাবা ওর হাতে আংটি পরানোর সময় কোথা থেকে একটা ছোট্ট বাচ্চা বয়স (২-৩) এসে অবন্তীর দিকে তাকিয়ে বললো আম্মু আমার ক্ষিদা লাগলে আমাকে কিছু খেতে দাও। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পরলো।বলার মতো শক্তি হারিয়ে হতবাক হয়ে চেয়ে রইলাম অবন্তীর দিকে।এ দিকে আমার বাবার হাত থেকে আংটিটা মাটিতে পড়ে গেল।আমি কোন ভাবেই চোখের জল লুকিয়ে অবন্তীকে নিয়ে দেখা স্বপ্ন গুলোর বাস্তবতা খুঁজতে লাগলাম।অবন্তীর চোখগুলো ছলছল করছিল মনে হয় সে কিছু বলতে চাইছিল।কিছু বুঝে ওঠার আগে বাবা আমার হাত টেনে নিয়ে গাড়িতে উঠালেন আর বললেন আর কোনদিনও যেন এই মেয়ের সাথে যোগাযোগ না করি।গাড়িতে বসে ভাবছিলাম অবন্তীর সাথে কাটানো সময় আর স্মৃতিগুলো।কিভাবে নিমেষেই একটা মানুষের স্বপ্ন এত তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়।বারবার মনে হচ্ছিল হৃদয়টা কেউ যেন ক্ষত বিক্ষত করে দিচ্ছে।বাসায় এসে কাউকে কিছু না বলে নিজের রুমে ঢুকে দরজাটা বন্ধ করে দিলাম। ওয়াশরুমে গিয়ে ইচ্ছামতো কান্না করলাম তবু যেন শান্তি খুঁজে পাচ্ছি না। প্রেমে ব্যর্থ হলে মানুষ কেন আত্মহত্যা করে এখন আমার আর বোঝার বাকি রইল না।যদিও আমি প্রেমে ব্যর্থ হইনি আমার সাথে প্রতারণা করা হয়েছিল। এই প্রতারণা বিষয়টা পরিবারের বাকি সবাই বুঝলেও আমি আর আমার মন সেটা বিশ্বাস করতে পারছে না, যে এই ভাবে মানুষ মানুষকে ঠকাতে পারে।আমার সব কিছু এলোমেলো হয়ে গেল।সবাই আমাকে অনেক বুঝাতে লাগলো কিন্তু আমি এখনো অবন্তীর মাঝে ডুবে রইলাম।অবন্তী বারবার ফোন দিচ্ছিল,প্রায় ২৩৭ টা এসএমএস করছে আমি ভুল করেও তার এসমএস গুলো দেখিনি।ওকে সব জায়গা থেকে ব্লক করে দিলাম সে যেন কোন ভাবেই যোগাযোগ করতে না পারে এই ভেবে।অবন্তী অনেক ভাবে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছিল কিন্তু আমি আর যোগাযোগ করিনি। এদিকে বেশ কিছুদিন হাসপাতাল না যাওয়ার কারণে হাসপাতাল থেকে বারবার ফোন দিচ্ছিল।নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে হাসপাতালে গেলাম গিয়ে হাসপাতালে দরজায় অবন্তীকে দেখেই নিজেকে আর সামলাতে পারলাম না।কোনভাবে অবন্তীকে পাশ কাটিয়ে নিজের রুমে গিয়ে বসলাম আর নিজের অগোচরে কান্না লুকানোর চেষ্টা করলাম। এভাবে কেটে গেল বেশ কিছুদিন। অবন্তী বারবার কি যেন বলার চেষ্টা করছে কিন্তু আমি কোন পাত্তা না দিয়ে নিজেকে ওর থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করলাম।অবন্তী সব সময় চোখে সামনে থাকার কারণে আমি ওকে ভুলতেই পারছিলাম না।তাই আমি সিদ্ধান্ত নিলাম ঐ হাসপাতাল থেকে বদলি হয়ে অন্য হাসপাতালে যাওয়ার জন্য। কিছুদিনের মধ্যে আমার বদলিও হয়ে গেল, যেদিন এই হাসপাতাল থেকে বিদায় নিব সেদিন অবন্তী সামনে এসে দাঁড়ালো। কিছু বুঝে ওঠার আগে ও আমাকে জড়িয়ে ধরে অনেক কান্না করতে লাগলো।আমিও নিরবে অনেক কেঁদেছি যে কান্নার কোন শব্দ হয়নি কিন্তু বুকটা ভেঙে চুড়ে চুরমার হয়ে যাচ্ছিল। অবন্তি বারবার বলছিল আমাকে ছেড়ে যেও না প্লিজ আমাকে ছেড়ে যেও না। আমি মনে মনে কিছু একটা ভেবে অবন্তীর হাত ধরে টান দিয়ে আমার থেকে দূরে সরিয়ে দিলাম আর হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে পড়লাম।নতুন কর্মস্থলে আসার পর অবন্তিকে বারবার মনে পড়ছিল মনে হচ্ছিল ও যেন আমার পাশেই আছে।অবন্তীকে চোখের সামনে থেকে সরাতে পারলেও মন থেকে কোনভাবে সরাতে পারলাম না। ওই যে কথায় আছে না মন যাকে চায় হৃদয়ও তাকে খোঁজে।কয়েক মাস যাওয়ার পর একটু স্বাভাবিক হয়েছি মাত্র।
(বর্তমান ঘটনা)- এখন আমার সামনে যে লাশটা পড়ে আছে সেটার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।বুকটা ধরপর করতেছে, কি থেকে কি হয়ে গেল।কোন মতে পোস্ট ম্যাডাম করে ওটির বাইয়ে বেরিয়ে যা দেখলাম সেটা তো রীতিমতো অবাক করার মতো।আমি যেখানে দাঁড়িয়ে আছি ঠিক তার কেয়েক হাত দূরে আমার অতীত দাড়িয়ে আছে।আপনারা হয়তো ভাবতেছেন এখন যদি আমার সামনে অবন্তী থাকে তাহলে কার লাশ পোস্ট ম্যাডাম করলাম একটু আগে।লাশটি ছিল ঐ ছোট্ট বাচ্চাটির যে অবন্তীকে আম্মু বলে ডেকেছিল।ওর রহস্য জনক মৃত্যুর কারণ কি সেটা আমিও এখনো বুঝে উঠতে পারছি না।আর এদিকে অবন্তী আমার সামনে, তবে কয়েক মাস আগে যে অবন্তীকে রেখে আসছিলাম সেই অবন্তী আর নেই।ওকে দেখে আমার চোখ থেকে পানি গাল বেয়ে পরতেছিল।পূর্বের সব কিছু চোখের কোনে নাড়া দিতেছিল।সব থেকে অবাক করার বিষয় হলো যে অবন্তী আমাকে পাওয়ার জন্য বা একবার জরিয়ে ধরার জন্য পাগল হয়ে থাকতো সেই অবন্তী আমাকে চিনতেই পারছে না।আমি অপলক দৃষ্টিতে শুধু তাকিয়ে আছি ওর দিকে।সে এখন মানুষিক রুগী।কাউকে চিনতে পারে না, পূর্বের সব কিছু ভুলে গেছে।আমি আমার চেম্বারের বসে সব কিছু ভাবতে লাগলাম।কেন বা অবন্তীর বাচ্চাটা আত্মহত্যা করলো আর কেনই বা অবন্তী পাগলি হয়ে গেলো।সব কিছু যেন রহস্য জনক মনে হচ্ছে।ঠিক কিছু ক্ষন পর আমার চেম্বারে একটি মেয়ে আসলো এসেই বললো আসতে পারি স্যার, আমি বসতে বলেই মুখের দিকে তাকিয়ে হতবাক হয়ে গেলাম।এখন আমার সামনে যে মেয়েটি বসে আছে সে দেখতে ঠিক অবন্তীর মতো।আমি অপলক দৃষ্টি তার দিকে তাকিয়ে আনমনে কোথায় যেন হারিয়ে গেলাম কিছুক্ষণের জন্য।পরক্ষণেই মেয়েটি কান্না জরিত কন্ঠে বললো স্যার যে ছোট্ট বাচ্চাটির পোস্ট ম্যাডাম করছেন তার কি সব প্রসেস শেষ নাকি আরো কিছু বাকি আছে।মেয়েটি কয়েক বার প্রশ্ন করার পর বল্লাম হুম সব প্রসেস শেষ চাইলে ওকে নিয়ে যেতে পারেন।শুধু ছোট একটা ফর্মালিটি আছে।বলেই একটা নোট বুক বের করে দিয়ে বললাম এখানে আপনার নাম আর মোবাইল নম্বরটা দিয়ে ওর লাশ নিয়ে যান।মেয়েটি আমার কথা মতো ঠিক তাই করলো।লাশ নিয়ে ওরা চলে যাওয়ার পর আমিও বাসায় চলে আসলাম। সেদিন সারা রাত আর ঘুমাতে পারলাম না।বার বার অনেক প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিলো।এরপর নিজের কৌতুহল বসত নোট বুকটা হাতে নিয়ে দেখলাম মেয়েটির নাম প্রিয়ন্তী।এভাবে কিছু দিন অতিক্রম হয়ে যায়। আমি নোট বুক থেকে প্রিয়ন্তীর ফোন নাম্বার নিয়ে ভাবতে লাগলাম তাকে কি ফোন করা ঠিক হবে কিনা।এসব ভাবতে ভাবতে ওকে ফোন করলাম।ও ফোন রিসিভ করে বললো কে আপনি? তার এমন প্রশ্ন শুনে একটু ভয় পেলাম।কোন রকম সংকোচ কাটিয়ে ওকে বল্লাম অবন্তী না মানে প্রিয়ন্তী আমি ডাক্তার রাহাত বলছিলাম।ও আমার নামটা শুনে বললো জ্বী স্যার বলেন।আমি ওকে বললাম আপনার সাথে আমার কিছু কথা ছিল।ও বললো জ্বী বলেন?আমি বললাম আমি যে কথা গুলো বলবো সেই কথা গুলো ফোনে বলা সম্ভব না।আমরা কি কালকে একটু দেখে করতে পারি? ও সম্মতি জানালো।পরের দিন আমার দেওয়া লোকেশনে ও আসলো আমি ওকে দেখে মিজের আবেগ কোন রকম কন্টোল করে ওকে বললাম সেদিনের ছোট বাচ্চাটির রহস্য জনক মৃত্যু ও ওর আম্মু মানুষিক রুগী হওয়ার পিছনের কারণ কি? ও উত্তরে যা বললো সেটা শুনে আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পরলো।প্রিয়ন্তী বললো আমি আর অবন্তী জমজ দুই বোন।অবন্তী আমার বড়। আপু একটা ছেলেকে ভিষণ রকম ভালোবাসত।ওদের সম্পর্ক ঠিকঠাক চলছিলো।হঠাৎ বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে ছেলে পক্ষ আপুকে দেখতে আমাদের বাসায় আসে।আমি তখন পড়াশুনার জন্য বাইয়ে ছিলাম।তারপর কিছু একটা ভুল বোঝাবুঝির জন্য ওদের বিয়েটা আর হয়নি।পরে আমি জানতে পারলাম ছেলেটা আপুর সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়ে অন্য হাসপাতালে বদলি হয়ে যায়।সেটা আপু সয্য করতে না পেরে মানুষিক ভাবে ভেঙে পরে।আর ধিরে ধিরে আপু অসুস্থ হতে থাকে এবং এক পর্যায়ে মানুষিক রুগী হয়ে যায়।এসব কিছু জানার পর প্রিয়ন্তীকে আর বলতে পারলাম না যে অভাগা ছেলেটি আর কেউ নয় আমি নিজেই।পরে বললাম ছোট বাচ্চার রহস্যময় মৃত্যু হলো কি ভাবে? প্রিয়ন্তী বললো ওই বাচাটির ক্যান্সার ছিল ওর ছোট কাল থেকেই। নিয়মিত ওষুধ খেয়ে বাঁচার সংগ্রাম করতো বাচ্চাটি।একদিন ওষুধ মনে করে বিষ খেয়ে ফেলে আর মৃত্যু হয় ছোট বাচ্চাটির।সব কিছু শুনে নিজের প্রতি ঘৃনা হচ্ছিল খুব।কয়েক দিন যাওয়ার পর অবন্তী বেশি অসুস্থ হয়ে পরে।তার কিছু দিন পর ওর মৃত্যুর খবর পাই প্রিয়ন্তীর কাছে।কান্না ভেজা চোখে ওকে শেষ দেখাটা দেখার জন্য ছুটে চলে যাই কিন্তু ওর সাথে দেখা করতে পারিনি।শুধু কবরের পাশে নীরবে কানা করে বাসায় চলে আসলাম।আমার আর প্রিয়ন্তীর প্রায় কথা হতো।আস্তে আস্তে ওর প্রিতি আমার ভালোবাসার সৃষ্টি হয় ওকে ভালোবেসে ফেলি।ও আমাকে অনেক পছন্দ করতো কিন্তু কখনো বলতো না। একদিন আমি ওকে প্রেমের প্রস্তাব দিলাম। ও কিছু না বলেই চলে গেল।আমি ভাবলাম ওকে এইসব বলা বোধ হয় ঠিক হয়নি।আমিও বাসায় এসে রুমে ঢুকতেই ফোনে একটা এসএমএস আসলো।এসএমএসে লেখা আমি আপনার প্রস্তাবে রাজি।আই লাভ ইউ রাহাত।আমি খুঁশিতে আত্যহারা হয়ে গেলাম।তার কিছুক্ষণ পর আবার এসএমএস টা দেখার জন্য ফোন হাতে নিলাম এসএমএস এর নাম্বার দেখে চমকে গেলাম,নাম্বারটা অবন্তীর।তারপর অবন্তীর নাম্বার থেকে আসা এসএমএস গুলো যে গুলা ওকে ব্লক করার আগে দিয়েছিল ওই এসএমএস ও সামনে আসতে লাগলো।ও বলে রাখা ভালো যে ওর নাম্বার টা ব্লক থেকে খুলেছিলাম ওকে হাসপাতালে দেখার পর। যাই হোক ওর এসএমএসে যা লেখা ছিলো সেটা পরে আমি কি করব বুঝতে পারছি না।অবন্তী লিখে ছিল যে বাচ্চাটা আম্মু বলে ডাকার জন্য আমাকে ছেড়ে চলে গেলে সেই বাচ্চাটা আমার ছোট বোনের বাচ্চা।আমি আর আমার বোন জমজ হওয়ার কারনে বাচ্চাটা ভুল করে আমাকে আম্মু বলে ডাকে।আর ভুলের সুত্রপাত হয় সেখান থেকেই।সেই ভুল ভাঙানোর মতো সময় টাও আমাকে দিলে না।বেইমান আমি ছিলাম না, বেইমানি আমি করিনি।তুমি যে ভুলের জন্য আমাকে ছেড় গেলে সেই ভুলটা একদিন তোমার ভাঙবে। সেদিন হয়তো আমি থাকবো না বা তোমাকে বুঝানোর মতো পরিস্থিতি আমার থাকবে না।নিমেষেই নিজের প্রতি প্রবল ঘৃণা হতে থাকে।আর বুক চিরে চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে হচ্ছিল আমি প্রতারণা করেছি।আমি ঠকবাজ, কথা দিয়ে কথা রাখতে পারিনি।এইসব ভাবতে ভাবতে আবার একটা এসএমএস আসলো আমার ফোনে সেই চিরচেনা নাম্বার থেকে।সেখানে লেখে ছিলো আমি তোমার অবন্তী আর যে যাকে প্রিয়ন্তী ভেবে ছিলে সেই আমি তোমার অবন্তী।তোমাকে দেওয়া কথা আমি রেখেছি মরনের আগেও আমি তোমার হতে চেয়েছিলাম, আর আজ আমি তোমারি হলাম।তোমাকে পাওয়ার জন্য মিথ্যে একটা নাটক করতে হলো তোমার সাথে।কিছু দিন আগে যে বাচ্চাটা মারা গেছে ওই বাচ্চাটা বিষ খাওয়ার জন্য মারা যায়নি।ওর ক্যান্সার ছিল এটা সত্যি, ও কিছু দিনের অতিথি ছিল আমাদের মাঝে।কিন্তু তোমাকে বলেছিলাম ও বিষ খাওয়ার জন্য মারা গেছে।সেটা মিথ্যা বলেছিলাম।ওর জন্য আমাদের মাঝে দূরত্ব তৈরি হওয়ায় ও মারা যাওয়ার আগে বলেছিল ওর শেষ ইচ্ছে আমাদের আবার এক করা।তোমাকে আর আমাকে এক করার জন্য ওর স্বাভাবিক মৃত্যুকে আত্মহত্যার নাটক করার প্লান ওই ছোট বাচ্চাটির।এই এসএমএস পাওয়ার পর আমি দৌড়ে গেলাম অবন্তীর কাছে। ওকে জরিয়ে ধরে অঝোরে কান্না করলাম অনেকক্ষণ।অবন্তীও অনেক কান্না করলো।শেষ হলো আমাদের মাঝে ভুল বুঝাবুঝির, পূর্ণতা পেল আমাদের ভালোবাসা।

“যদিও এই গল্পে মৃত্যু নিয়ে নাটক করা ঠিক হয়নি।যাই হোক এই গল্প থেকে শিক্ষানীয় বিষয় হলো কাউকে ভুল বুঝার আগে তাকে নির্দোষ প্রমান করার সুযোগ দেওয়া দরকার।তা নাহলে নিমেষেই জীবন থেকে হারিয়ে যেতে পারে মহামূল্যবান সব কিছু।যা পুনরায় ফিরিয়ে পাওয়া গেলেও জীবন থেকে কেঁড়ে নেয় অনেক কিছু।পরিশেষে একটাই প্রর্থনা পূর্ণতা পাক পৃথিবীর সকল ভালোবাসা”

শেয়ার করুন

আরো পড়ুন
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট