” অব্যক্ত কথা ”
কলমে- জাহিদ সরোয়ার
২১/২/২০১৭
শুন্য ক্লাসরুমের এক কোনে,
তোমার নাম লিখতে চেয়েছিল আমার কলম,
কিন্তু হাত কাঁপত,
সেই নামের ওজন যে আমার ছোট্ট হৃদয় বুঝত না।
তোমার ছায়ার মৃদু ছোঁয়া,
তোমার অজান্তে আমাকে এক অদৃশ্য বন্ধনে বাঁধত।
তুমি জানো কি?
স্কুলের সেই পুরনো বেঞ্চে এখনো
আমার অপেক্ষার গন্ধ লেগে আছে।
প্রতিটি খেলার মাঠ, প্রতিটি করিডোর—
তোমার নামের প্রতিধ্বনিতে ভরা।
তুমি হয়তো শুনতে পেতে
যদি একটু থেমে, একটু দেখতে।
টিফিন ব্রেকে তুমিই ছিলে
আমার সবক্ষণের চাওয়া।
তোমার খাবারের বাটিতে হাত ছোঁয়াতে
আমার হৃদয় দুলত,
যেন আমি পৃথিবীর সব চেয়ে অমূল্য রত্ন ছুঁয়ে দেখেছি।
আমার বুকের ভিতর ছিল এক বই,
পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠায় লেখা ছিল তোমার গল্প।
প্রতিটি পাতা যেন ফিসফিস করে বলত,
“তুমি কি জানো না?
এই হৃদয় তোমার জন্য দোলা খায়!”
একদিন, স্কুলের ছুটির ঘণ্টা বাজল,
তুমি চলে গেলে, আর ফিরে এলে না।
ক্লাসের জানালা দিয়ে তোমার শেষ চলার দৃশ্যটা
আমার চোখে চিরকাল লেগে আছে।
আমি সেদিন বলিনি,
“থেমে যাও। তুমি ছাড়া শূন্য লাগবে এই পৃথিবী।”
আজ এত বছর পরে,
আমার চুলে সাদা ছোঁয়া আর চোখে বয়সের ছাপ।
তবু যখন স্মৃতি জানালায় চোখ রাখি,
তোমার সেই হাঁসফাঁস করা চুলের ঝাপটা,
তোমার কণ্ঠস্বরের মৃদু প্রতিধ্বনি—
আমাকে ফিরে নিয়ে যায় সেই দিনগুলোতে।
তুমি কি জানো?
তোমার চলে যাওয়ার পরে
প্রতিটি পূর্ণিমায় চাঁদকে জিজ্ঞাসা করতাম,
“তুমি কি তাকে দেখেছো?
সে কি এখনো আমার জন্য এক মুহূর্ত থামে?”
চাঁদ হয়তো হাসত,
তোমার স্মৃতিকে আমার বুকের কোণে রেখে
জীবন এগিয়ে নিতে।
বন্ধুরা, এই কবিতা নয়,
এটি আমাদের সবার গল্প।
তোমার সেই চেনা মুখটি,
যে হয়তো পাশে বসে এখনো হাততালি দিচ্ছে
বা বহু দূর থেকে এই স্মৃতির প্রদীপ জ্বালিয়ে রেখেছে।
আমরা হয়তো বলিনি তখন,
কিন্তু আজ স্মৃতির আকাশে
তোমার নামই উজ্জ্বল তারা হয়ে আছে।
শেষে বলি:
“হারিয়ে যাওয়া প্রেম,
তুমি যেন না বলা কথার সুর হয়ে বাজো।
তোমার আলোয় আমাদের কৈশোর
আজীবন জীবন্ত থাকুক।”